আজ
২৬শে মার্চ। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবস এবং জাতীয় দিবস।১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ দিনটি ছিল শুক্রবার। বাংলাদেশের
এই স্বাধীনতা ঘোষণাপত্র জারি করা হয়েছিল ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল। বিশ্বের বুকে লাল-সবুজের পতাকা ওড়ানোর দিন আজ। ১৯৭১ সালের
এদিনে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষিত হয়েছিলো। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার
কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা
দেয়া হয়। বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা সংক্রান্ত বিবৃতিটি আওয়ামী লীগ নেতা এম
এ হান্নান সর্বপ্রথম পাঠ করেন। এর একদিন পরে ২৭শে মার্চ তত্কালীন মেজর জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর পক্ষে দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীনতার ঘোষণাটি পাঠ করেন। চট্টগ্রাম
কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে যে ঘোষণা পাঠ করা হয়। সে ঘোষণাটি ছিল এরকম- [ দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্স অব বাংলাদেশ অন বিহাফ অব আওয়ার গ্রেট
ন্যাশনাল লিডার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান”। The Government of the Sovereign
State of Bangladesh, on behalf of our great national leader, the supreme
commander of Bangladesh, Sheikh Mujibur Rahman, do hereby proclaim the
independence of Bangladesh. It is further proclaimed that Sheikh Mujibur Rahman
is the sole leader of the elected representatives of the 75 million
people of Bangladesh....................................................... বঙ্গবন্ধুর আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা ঘোষণার কপি ইংরেজি ও বাংলায় ছাপিয়ে হ্যান্ডবিল আকারে চট্টগ্রামে বিলি করা হয়েছিল ]
বাংলাদেশের স্বাধীনতা
একদিনে অর্জিত হয়নি। এই সংগ্রামের পেছনে রয়েছে দীর্ঘ ও গৌরবোজ্জ্বল একটি অধ্যায়। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চে ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে(বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান)
উত্তাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম” ঘোষণা দিয়ে গোটা জাতিকে স্বাধীনতার লক্ষ্যে
ঐক্যবদ্ধ করেন। তিনি আরো বলেন, “আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি, প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো, তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে”। মূলত ৭ই মার্চই
আমাদের স্বাধীনতার ঘোষণা হয়ে যায়। ২৫শে মার্চ দিবাগত রাত ১২টার পর
আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসে মাত্র। পাক হানাদার বাহিনী
বঙ্গবন্ধুকে ধানমন্ডির বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যায়। গ্রেফতারের আগে
তিনি স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক
ঘোষণা দিয়ে যান। এরপর এক রক্তাক্ত অধ্যায়ের মধ্য দিয়েই বাঙালি জাতিকে
তাদের স্বাধীনতা অর্জন করতে হয়।
বঙ্গবন্ধুক
পাকিস্তানের করাচি শহরের মিয়াউয়ালি কারাগারে বন্দী
রাখা হয়।বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানে কারাগারে নিঃসঙ্গ। তার
জন্য ফাঁসির মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল। কবরও খোঁড়া হয়েছিল। বিচারের নামে প্রহসনপর্বও চলেছে। কিন্তু
বঙ্গবন্ধু তখন সাড়ে সাত কোটি বাঙালিসহ বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের কাছে এক অনুপ্রেরণার নাম। বঙ্গবন্ধুর নামে বাঙালি
যুদ্ধজয়ের মনোরথের ধ্বজা উড়িয়ে দিয়েছিল।
শত্রু হননে মত্ত হয়েছিল বাঙালি। বঙ্গবন্ধু সেই মার্চেই পথ দেখিয়েছিলেন। তাই সেস্নাগান উঠেছিল, “বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো”।