Friday, May 26, 2017

Ramadan Mobarak -2017(মোবারক হো পবিত্র মাহে রমজান)

আজ ২৭/৫/২০১৭ রমজানের প্রথম দিন। সৌদি আরব সহ আরব বিশ্বের সকল দেশে আজ থেকে মাহে রমজান শুরু হয়েছে। আরবি শব্দ রামাদ্বান থেকে এসেছে রমজান বা রামাদান। রমজান ইসলামি পঞ্জিকা হিসেবে নবম মাস। এ মাসে বিশ্বব্যাপী মুসলিমগণ ইসলামিক উপবাস সওম পালন করে থাকেন। রমজান মাসে রোজাপালন ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের মধ্যে তৃতীয়তম। রমজান মাস চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে ২৯ অথবা ত্রিশ দিনে হয়ে থাকে যা নির্ভরযোগ্য হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। বাংলাদেশ সহ ভারত উপমহাদেশের এটা দেশে “রোজা” নামে পরিচিত। রমজান মাসের ফজিলতের মাধ্যমে তামাম পৃথিবীর মুসলিম সম্প্রদায় মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে থাকেন। রজানের প্রথম দশদিন রহমতের, দ্বিতীয় দশদিন মাগফিরাত ও তিৃতীয় অংশ হল নাজাতের। রহমত, মাগফিরাত এবং মুক্তির পয়গাম নিয়ে আমাদের মুসলিম উম্মাহর সামনে হাজির হয় পবিত্র মাস মাহে রমজান। রমজান মানুষের পশুত্বকে খতম করে জাগ্রত করে মনুষ্যত্বকে।
রোজা ফরজ হয় এই রমজান মাসেই। রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের মাস এই রমজান। এই মাসে জান্নাতের সকল দরজা খুলে দেওয়া হয়। আর জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়। শুধু মাত্র রমজানের জন্য বাকী এগারো মাস জান্নাতকে সাজানো হয়ে থাকে। এই মাসে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পথভ্রষ্ঠ শয়তানকে বেঁধে রাখেন, যাতে সে মুমিনদের কোন ক্ষতি করতে না পারে। এ মাসের একটি ফরজ আদায় অন্য মাসের ৭০টি ফরজ আদায়ের সমান। আর একটি নফল অন্য মাসের একটি ফরজের সমান। এই মাসে যে কোন দান-সদকা, ভাল কাজের প্রতিফল আল্লাহপাক ৭০গুন করে দিয়ে থাকেন। যা অন্য মাসে মাত্র ১০গুন। জান্নাতের একটি দরজার নাম রাইয়ান। রোযাদারকে ঐ দরজা দিয়েই ডাকা হবে। যে রোজাদারগণ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে সে কখনও পিপাসিত হবে না।
রোজা বুকের ভেতরকার জটিলতা এবং পেরেশানিগুলো দূর করে দেয়। দেহ ও আত্মার ওপর শান্তির প্রভাব ফেলে, এটিও রোজার অন্যতম একটি ফজিলত।
আসলে রমজানের এ বাহ্যিক উপকারিতার কথা আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞান বেশ কিছুকাল পূর্বেই প্রমাণ করেছে। আল্লাহ পাক আমাদের জন্য এ বিধানটি দিয়েছেন ফলে এতে অবশ্যই কল্যাণ নিহিত রয়েছে।
আর একটি বিষয় হচ্ছে রমজান এলেই শুধু কোরআনের মাহাত্ম্য বা মর্যাদা বেড়ে যায়। বাকি মাসগুলো গুরুত্ব দেই না। রমজানে আমরা নিজেকে সংযত রাখার চেষ্টা করে থাকি, রমজান বিদায় নিলে আবার খারাপ কাজে ঢুকে পড়ি যা মোটেও সঠিক নয়।
পরিশেষে সবাই আমরা রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করে চলি এবং একমাস রোজা পালন করি সেই সাথে রমজানের পরেও আমরা সবাই যেন ইবাদত-বন্দিগির করি সেদিকেও আমাদের মনোযোগ দেয়া জরুরী। আল্লাহপাক আমাদের সবাইকে সেই তৌফিক দান করুক। আমিন।

(Sahorail Mela-2017) "জমে উঠেছে সাহরাইল সিদ্ধাবাড়ী মেলা-২০১৭"

মেলা সামাজিক আনন্দ-বিনোদন ও ধর্মীয় উৎসবের কারণে একটি স্থানে অনেক মানুষ একত্রিত হয় । মেলা বিভিন্ন রকমের হতে পারে । মেলার সঙ্গে গ্রামীণ জনগোষ্টীর কৃষ্টি ও সংস্কৃতির যোগাযোগ থাকে । বাংলার এই সংস্কৃতিতে থাকে সব ধর্মের মানুষের সংস্কৃতির সমন্বয় । মেলাকে ঘিরে গ্রামীণ জীবনে আসে প্রানচাঞ্চল্য। আশে পাশের ২০/৩০ গ্রামের লোকজন মেলায় সমাগম ঘটে।

মানিক্গঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলায়  সাহরাইল সিদ্ধাবাড়ী মেলা-২০১৭ একটি পুরাতন মেলা। এটি শায়েস্তা ইউনিয়নের সাহরাইল বাজারে পাশে মিলে থাকে। স্থানীয় সিদ্ধার্থীরা মেলার আয়োজন করে থাকে। এ মেলাটি ৩০০ থেকে ৪০০ বছর যাবৎ উদযাপিত হয়ে আসছে বলে ধারণা করা হয়ে থাকে। জ্যৈষ্ঠ মাসে মেলাটি শুরু হয় এবং পনের দিন থেকে এক মাস ব্যাপী মেলাটি চলে। এই মেলায় প্রধান আকর্ষণ সার্কাস, পুতুল নাচ, এবং নাগরদোলা। যাত্রা গানেরও আয়োজন করা হয়।
এছাড়া বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী মেলায় বেচা-বিক্রী হয়। রাঁধুনীর মসলার কাঁচামাল ধনিয়া,শুয়াজ, জৈন, তরিতরকারী কাটাকাটির দা-বটি,বাচ্চাদের খেলনা সামগ্রী, বেতের তৈরী ধামা-কাঠা এখানে পাওয়া যায়। বেদে বহরের চমৎকার আয়োজন মেলাকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। মহিলাদের ভীড়ে লাল,নীল শাড়ির ছোঁয়ায় বেদে বহরের অলি গলি রঙিন হয়ে উঠে। মিষ্টির দোকান গুলোও থাকে লোকজনে ভরপূর। রসগোল্লা, চমচম, কালো জাম, মোহনভোগ সহ বাহারি জিলেপীও মিষ্টির দোকানের গলি থাকে পরিপূর্ণ। সেই সাথে মৌমাছিদের সরব আনাগোনা আর ভন ভন শব্দ তরঙ্গ মেলাকে ভিন্ন এক মাত্রার যোগান দেয়। গ্রামীণ মৃৎশিল্প ও কারুপণ্যের বিক্রীও মেলার আরেক আকর্ষণ। সবচেয়ে মজার দৃশ্য সাধু-সন্যাসিদের এরিয়া। বিভিন্ন
বয়ষ্ক সাধুদের সাথে ক্ষুদে সাধুদের সমাগম হয় সাহরাইল মেলায়।
সব মিলে সাহরাইল মেলা-২০১৭ এবার বেশ জাঁকজমকপূর্ণ। সবাই আনন্দঘন মূর্হুতে কাটাবে, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে মেলায় যাবে,রাস্তায় থাকবে বাইসাইকেল,মোটর সাইকেল, রিকশা-অটোর দৌড়াদৌড়ি। এমন দৃশ্য সত্যি মনকে দোলা দেয়। এই প্রবাস জীবনে একবার হলেও এক পলক তাকাতে ইচ্ছে জাগে গ্রামীণ মেলার দিকে। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে শেষ করছি। ধন্যবাদ।

Thursday, May 25, 2017

Fazlur Rahman's Poem (ফজলুর রহমান কবিতা)

"রূপসী কণ্যা"
---ফজলুর রহমা
রূপসী উড়ায়ে লাল বেনারসি শাড়ির আঁচল,
কাশবনের কণ্যা এলোমেলো কেশ উড়ে চঞ্চল।
হাসিতে তার মুক্তা ঝরে মায়াবী সেই চেহারা,
লাল ঠোঁটে ঝিলিক ছড়ায় মসৃণ আমলকী বহেরা।
তেমনি দেখেছি তারে প্রিয়ার সেই কালো চোখ,
যেমনি দেখেছে জীবনানন্দ মায়াভরা বাংলার মুখ।
আমি বার বার ফিরিতে চাই আমার প্রেমের বঙ্গদেশে,
যেখানে মিষ্টি গান গায় কোকিল ধান শালিকের বেশে।
পাগল করা ফুলের হাওয়া যে দেশে অবিরাম বয়ে যায়,
মনের মানসী লাউয়ের শাক নিয়ে বসে সুধায় আমায়।
আমি তার জন্য প্রহর গুণে যাই বছর-মাস-দিন,
সে হবে মোর মনের আয়নার একজন শারমিন।
সৌদি আরব-২৪/৫/২০১৭


"বসন্ত দিনে"
------ ফজলুর রহমান
কত ফুলের মিলন মেলা আজি বসন্ত দিনে,
প্রেমের অমৃত সুধা মিলবে কেমনে তুমি বিনে।
আমি জেগে রই রাত্রির ঘোর অন্ধকারে চেয়ে থাকি,
করবীর মালা নিয়ে তোমার আসতে আর কত বাকী।
বসন্তের দমকা হাওয়ায় পুস্প-পাপড়ি খসে পড়ে যায়,
প্রিয়তমার গাঁথা ফুলের মালা আমায় কখন যে পড়ায়?
আমি চিন্তিত আমি ক্লান্ত প্রেমের পথিক হৃদয়ে ভয়,
মালিনীর মালা রহিবে মোর গলে তাইতো মনে হয়।
আমার প্রতীক্ষা আমার অপেক্ষা এ শুধু তোমার জন্য,
এ জীবনে তোমাকে হাড়ালে প্রেমিকের বুক হবে শূণ্য।
হাড়াতে চাই না তোমায় চলে এস কৃষ্ণচূড়ার ছায়ায়,
বসন্তের পুষ্প মঞ্জুরী মেখে তাকাবো শ্যামল মায়ায়।
তুমি কোথায় শিমুল পলাশের গুচ্ছ নিয়ে আছ বসে,
আমার হাতে বকুলের মালা তাতে চাঁপা ফুল যায় খসে।
সৌদি আরব-২৩/৫/২০১৭

"শ্রাবণের ভালবাসা"
----- ফজলুর রহমান
শ্রাবণের ঝিরিঝিরি হাওয়া আর হাসনাহেনার সুভাষ,
বিষাদে জ্বলে যাওয়া প্রেমিক সেও পায় বাঁচার আচ্ছাস।
পলে পলে ফিরে ফিরে সুগন্ধী গন্ধরাজের মিষ্টি গন্ধ,
পাগল করে হদয় আমার মনটা হয়ে যায় স্নিগ্ধ।
রক্তজবা আর মল্লিকার রক্তিম আভায় রঙিন তুমি,
যদি না পেতাম তোমার পরশ অন্তর হত মুরুভূমি।
তুমি আছ বলে তারারা খেলা করে নীল আসমানে,
ফুলেরা ফুটে বলে এত সৌন্দর্য থাকে ওই বাগানে।
আলো আর আলেয়া হয়ে এলে তুমি আমার জীবনে,
জলন্ত প্রেমের প্রদীপ নিভিতে দেব না সেই মরণে।
ভালবাসা অমর অবিনশ্বর হয় এই ধরাধামে,
মানব কুলে জন্ম আমার প্রেম রবে জনমে জনমে।
ভুলিতে চাই না আমি সুন্দর তোমার ভালবাসা,
ক্ষণে ক্ষণে মনে মনে থাকিবে শুধুই প্রত্যাশা।
সৌদি আরব-২১/৫/২০১৭

"ভালবাসার গল্প"
---- ফজলুর রহমান
কুয়াসাছন্ন সকালে মেহেদি রাঙানো পায়ের ঝলকানি,
প্রিয়তমা শারমিনকে যেভাবে দেখেছিলাম সেই কাহিনী।
নুপুর ছিল সাদা পায়ে ঝুমুর ঝুমুর চমৎকার শব্দ,
হৃদয় আমার পুলকিত হয়ে উঠে মুগ্ধ আমার চিত্ত।
সুধালাম তাকে মনের আবেগ ঢেলে বলিলাম কথা,
জানিয়ে দিলাম শত জনমের আমার মনের ব্যথা।
শারমিন শান্ত এবার, কহে মোরে ভালবাসতে পার?
যদি ব্যর্থ হও নিটোল ভালবাসায় এই দুনিয়া ছাড়।
কহিলাম তাকে আত্মার ভাষা যা ছিল আমার মনে,
অনেক স্বপ্ন তোমাকে নিয়ে জানালাম কানে কানে।
স্বপ্ন হল সত্যি দুজনার সুখের মিলনের যাত্রা শুরু,
নিয়তি জানে কি হবে পর জনমে কলিজা দুরু দুরু।
শারমিন ভাসে স্বপ্ন ভেলায় তাকিয়ে মিলন মেলায়,
কত দিন আর ভাগ্যের হায়াত প্রেম ঢাল এ বেলায়।
সৌদি আরব-২১/৫/২০১৭

Baking Mango (আম কুড়ানো)

ঝড়ের দিনে মামার বাড়ী
আম কুড়াতে সুখ,
পাকা জামের মধুর রসে
রঙিন করি মুখ
      ---- জসীম উদ্দিনের
পল্লিকবি জসীম উদ্দিন চমৎকার করে ফুটিয়ে তুলেছেন আম কুড়ানোর গল্প তার লেখার মাঝে। প্রাইমারী স্কুলে কে না পড়ছে এ কবিতাটি। আম কুড়ানো শৈশবের এক মজার স্মৃতি। সবার জীবনেই এ ঘটনা ঘটেছে কম বেশী। ছেলে বেলার স্মৃতি গুলি  বড়ই মনোরম মনে হয়। অনেক কথাই আজ  ভুলে বসেছি। তারপরও কিছু কথা বলার সাধ জাগে, স্মৃতিচারণ করতে ভাল লাগে। কারণ ছোট বেলা সবারই ভীষণ এক দুরন্ত সময়। সব কিছুই তখন নতুন নতুন ভাব। সব কিছু খেতে ভাল লাগে। মুখে রুচি থাকে যথেষ্ট ভাল আর খারাপ যাই হোক সবই খেতে ভাল লাগে। সেই সময় কে শুনে বাপ-মায়ের কথা। আম কুড়াতে চলে গেছি কত জায়গায় জঙ্গলের গভীরে গিয়েও আম কুড়িয়েছি আমার নানা বাড়ীর পাশে তারা ভাইয়ের আমগাছ ছিল অনেক বড় বড় ফজলি আমের গাছ ছিল বেশ কয়েকটি ঝরের দিনে সেই বাড়ীতে যেতাম আম কুড়াতেবেতের ঝুর ছিল বিরাট তার নিচে চলে যেতাম আম কুড়াতেআমার নানীর একটি কাঠের আলমারী ছিল আম কুড়িয়ে সেই আল্মারীতে  ভরে ফেলতামআরও কত বাড়ীতে যেতাম আমার জন্য ছোট বেলার এ কাহিনী গুলি মনে হলে খুব ভাল লাগে। কাঁচা আম চাকু দিয়ে কেটে লবন-লঙ্কা মেখে  একসাথে বন্ধুদের নিয়ে খাওয়া সেকি আর ভুলবার বিষয়? নিজের বাড়ীর না হোক মহল্লায় তো আর আম গাছের কমতি নেই। সবার বাড়ীতে দুএকটি আম গাছ থাকা তো মামুলি ব্যাপার। ব্যাস... মার ঢিল, নয়তো গাছ বেয়ে বেয়ে মগ ডালে গিয়ে পেরে নিয়ে আসতাম আম। এদিকে বাড়ীওয়ালার সাথে বিড়ি-সিগারেট দিয়ে ভাব জমাতাম সেই ফাঁকে আম চুরি চলতে থাকতো। এসব আজ কল্প কাহিনী মনে হলেও  এক সময়ে ছিল রিয়ালিটি। খুবই মজাদার কাহিনী।  ছাত্র জীবনে বন্ধুদের নিয়ে কত কিছুইতো করেছি। শুধু আম কেন ডাব কি কম পান হয়েছে? নারিকেল বৃক্ষে রশি বেঁধে নামিয়ে দেয়া হত একেবারে নিচে। আর ডাবেরা এসে যেত হাতের মুঠে। হা হা হা। ডাব চুরির সেই সব দিন আজ কোথায়!!! সবার শৈশবেই একটু আধটু এসব হয়ে থাকে। ডোন্ট বি  মোর অনেস্টআমরা কেউ ফেরেশতা নই।


সবশেষে সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে আজকের মত বিদায়।


Sunday, May 14, 2017

বাদল দিনের খিচুড়ি --------ফজলুর রহমানের কবিতা-৩

"বাদল দিনের খিচুড়ি"
--------ফজলুর রহমান।

বাদল ঝরা বৃষ্টির রজণীর স্বাদ নিতে
খিচুড়ি-গোশত-চাটনির মজা পেতে
কেউ ব্যাকুল সরিষার তেলে পেয়াজ ডলে,
বুড়ো দাদু শক্ত হাতে আপন পাতে লঙ্কা ডলে।
আমচুর-জলপাই খাই আর না পাই,
আজকের বর্ষায় দাদীদের জামানায় ফিরে যাই।
বিরিয়ানি-বোরহানি-জাফরানি আজকে নাহি চাই।
খানদানী পোলাও সবাইকে ভুলাও চাহিবে না ঘি,
মেঘের দিনে টমেটো-সালাদের মজা দেবে কি ঘি?
চাসনে তোরা কোপ্তা-কোরমা খেয়ে নে আজ খিচুড়ি,
বাদল বেলায় চাদর কাঁধে হাটে যায় কোন বেপারী?


 সৌদি আরব-১৪/৫/২০১৭

"আজি হতে ৩২ বছর আগে" - ফজলুর রহমানের কবিতা-২ Fazlur Rahman's Poem

আজি হতে ৩২ বছর আগে

       ------ফজলুর রহমান

আজি হতে ৩২ বছর আগে,
কে কোথায় ছিলে বন্ধুরা জেগে।
১৯৮৫ সালের ব্যাস ভাবো কি মনে
এতটা বছর পেরিয়ে রবে কি স্মরণে?
চারিগ্রাম হাইস্কুলের সবুজ সেই মাঠে,
যে স্মৃতি তাড়া করে নুরুনী গঙ্গার ঘাটে।
বিদ্যালয়ের পিছনেই তো ওই নদী,
সাথীরা মিলে দিন রাত করেছি কত ফন্দী।
কত হাসি কত গান বেজেছে আবার কি সম্ভব,
আজও কি এতটা পথ পেরিয়ে ভুলেছি সে সব?


সৌদি আরব-১০/৫/২০১৭

সে আমার জন্মভূমি- He is my Homeland - (ফজলুর রহমানের কবিতা) Fazlur Rahman's Poem-2

সে আমার জন্মভূমি
------------ফজলুর রহমান

জোৎস্না বিলায় চাঁদ আকাশে একা বসে,
ফুলেরা জেগে জেগে মুক্তোর মত হাসে।
রূপালী চাঁদ ফিরে ফিরে তাকায় জমিনে,
তারারা মুসকি হেসে থাকে নীল আসমানে।
এ যেন ওদের মনের চমৎকার মিতালী,
গালিচার জুঁই-চামেলী ডাকে কই গো শেফালী।
রক্ত রাঙ্গা কৃষ্ণচূড়া আবির ছড়ায় বাতাসে,
গ্রীষ্মের দুপুরে দমকা হাওয়া বহে দীর্ঘশ্বাসে।
জারুল আর জামরুলের গন্ধ মাখা প্রকৃতি নাচে,
কাঁঠালের সুভাসে মধু সঞ্চয়ে মৌমাছিরা নাচে।
বাংলার ষড়ঋতু উঁকি মারে দুই মাসে মাসে,
চির সবুজের সমারোহ বয়ে যায় ঘাসে ঘাসে।
এ কেমন মায়া ভড়া হৃদয় কারা বাংলা আমার,
মরার আগে ফিরি যেন নিজ জন্মভূমিতে আবার।

সৌদি আরব-১৩/৫/২০১৭

Saturday, May 6, 2017

Shamsuzzaman Khan, DG, Bangla Academy. শামসুজ্জামান খান(মাখন মিয়া) মহা পরিচালক,বাংলা একাডেমী


জনাব শামসুজ্জামান খান ১৯৪০ সালের ২৯ শে ডিসেম্বর মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলায় চারিগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৬ সালে চারিগ্রাম এস এ খান হাই স্কুল থেকে প্রবেশিকা এবং ১৯৫৯ সালে জগন্নাথ কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও ১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্মান বাংলা ও ১৯৬৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর বাংলা ডিগ্রি লাভ করেন । তিনি হরগঙ্গা কলেজ, মুন্সিগঞ্জ ১৯৬৪ সালে অধ্যাপনা করেন, ১৯৬৪ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত জগন্নাথ কলেজ, ঢাকা অধ্যাপনা করেন। ১৯৬৮-১৯৭৩ সালে দুই দফা তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপনা করেন। ১৯৯৯ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত তিনি খন্ডকালীন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন। ১৯৯৬-১৯৯৭ সালে তিনি ছিলেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর মহাপরিচালক। এরপর ১৯৯৭ থেকে ২০০১ সালে ছিলেন জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক। বর্তমানে তিনি বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

[ তিনি তুর্কু বিশ্ববিদ্যালয়, ফিনল্যান্ড থেকে ফোকলোর প্রশিক্ষণ সার্টিফিকেট লাভ করেন।]
লোক সংস্কৃতির ক্ষেত্রে যে নামটি অনস্বীকার্যভাবে চলে আসে তিনি হলেন জনাব শামসুজ্জামান খান। তিনি তাঁর লেখায় নানাভাবে অবদান রেখেছেন। তিনি সকল প্রতিষ্ঠানে তাঁর প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। কাজের পরিবেশকে বেগবান করেছেন। কর্মের সাধনা ও মনন চর্চা তিনি অনেক দক্ষতার সাথে করে যাচ্ছেন। তিনি বহুমাত্রিকভাবে লেখক। তিনি একজন আলোকিত মানুষ এবং প্রচারবিমুখ মানুষ। পেশাগত জীবনে তিনি সরকারের অধীনে বিভিন্ন বিভাগে কাজ করার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। কিন্তু কোনো সরকারই তার চিন্তার বাইরে কাজ করাতে বাধ্য করতে পারেনি। তিনি নিজের গতিতে চলেছেন সর্বদা।
জনাব খান জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সত্যনিষ্ঠ থেকে নির্ভয়ে কাজ করে চলেছেন। কোন বাধা তাকে স্পর্শ করতে পারেনি।
তিনি লোক সাহিত্য থেকে শিশু সাহিত্যের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আশিটি বই লিখেছিলেন।
জনাব খান ১৯৬৭ সালের ১০ ডিসেম্বর চারিগ্রাম খান পাড়ার মরহুম জনাব ফরহাদ খানের কণ্যা "হেলেনা বেগমের" সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
২০০১ সালে তিনি বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।
২০০৯ সালে তিনি একুশে পদক লাভ করেন।
২০১৭ সালে তিনি গবেষণা ও প্রশিক্ষণে স্বাধীনতা পুরষ্কারে ভুষিত হয়েছেন।

ফজলুর রহমান, সৌদি আরব।
Cell Phone:00966534580722
Email: frahmanapple@yahoo.com
E: rahmanmedical.hall89@yahoo.com
Twitter:@Frahmantwittman

Monday, May 1, 2017

Poet Khan Mohammad Moinuddin (কবি খান মুহাম্মদ মঈনুদ্দীন)

"ঐ দেখা যায় তাল গাছ
ঐ আমাদের গাঁ,
ঐ খানেতে বাস করে
কানা বগীর ছা"............
---খান মুহম্মদ মঈনুদ্দিন
কবিতাটি লিখেছেন কবি খান মুহম্মদ মঈনুদ্দীন। তিনি একজন কবি, সাহিত্যিক, লেখক। তিনি ১৯০১ সালের ৩০শে অক্টোবর মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইর উপজেলার চারিগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। (চারিগ্রাম অগ্রণী ব্যাংক এবং কৃষি ব্যাংক বিল্ডিং ঘেঁষে পূর্ব পাশের(কালু মিয়ার চা এর দোকান) প্লটই কবি খান মুহাম্মদ মইনুদ্দিনের বাড়ী। এখন সম্ভবত বাড়ীটি বিক্রী হয়ে গেছে।
তার বাবার নাম মুহম্মদ মমরেজ উদ্দীন খান ও মায়ের নাম রাকিবুন নেসা খানম। পিতা-মাতার চার ছেলে দু'মেয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন পঞ্চম সন্তান। মা-বাবা আদর করে ডাকতেন "হিরু মিয়া" ।
মঈনুদ্দীনের বাবা মমরেজ উদ্দীন নিজ গ্রামের একটি পাঠশালায় শিক্ষকতা করতেন। বাবার কাছে এই পাঠশালায় মঈনুদ্দীনের লেখাপড়ার হাতে খড়ি। মঈনুদ্দীন পড়াশোনায় ছিলেন খুবই মনোযোগী।
শৈশবের পর পরই কবি পিতা মাতাকে হারান। তখন কবির বয়স মাত্র বার বছর। কবির পূর্বপুরুষরা তেমন কোন ল্যান্ড প্রপার্টি অথবা অন্য কোনো সহায় সম্পদ রেখে যাননি। যার ফলে অল্প বয়সেই কবিকে জীবিকার সন্ধান করতে হয় এবং তিনি চলে যান কলকাতা। সেখানে গিয়ে পুস্তক-বাঁধাই কর্মী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ছোটবেলায় বই পড়ার প্রতি প্রবল ঝোঁক ছিল কবি মঈনুদ্দীনের। নতুন বইয়ের গন্ধে আর ছড়ার ছন্দের ঝংকারে উৎফুল্ল হয়ে ওঠতেন। একবার কলকাতায় এসে তিনি নিজ হাতে বই বাঁধই করে সারি সারি ভাবে সাজিয়ে রাখেন সারা ঘর ভরে। আর কাজের ফাঁকে ফাঁকে বই খুলে চোখ বুলান, গন্ধ শুকেন। নতুন বইয়ের গন্ধে মন আনন্দে ভরে ওঠে।
মঈনুদ্দীন একাকী মনে ভাবতে লাগলেন কবি হতে হলে ভাল লেখাপড়ার প্রয়োজন। সেই চিন্তা মনে পোষণ করে ভর্তি হলেন নৈশ বিদ্যালয়ে। দিনে কারখানার কর্মচারী হিসেবে কাজ করেন আর রাতের বেলায় বই হাতে স্কুলে পড়তে যান। এই সময় বালক কবি মঈনুদ্দীনের সঙ্গে পরিচয় হয় একই মহল্লার ছাত্র খন্দকার আবদুল মজিদ নামে এক ছেলের সঙ্গে। আবদুল মজিদ তিনিও ছিলেন একজন সাহিত্য সেবক। সাহিত্য নিয়ে আলাপ আলোচনায় একসময় দু'জন ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। দু'বন্ধু মিলে রাত জেগে হাতে লিখে প্রকাশ করেন 'মুসাফির' নামে একটি দেয়াল পত্রিকা। এই দেয়াল পত্রিকা প্রকাশের পর মঈনুদ্দীন আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন। তারপর তিনি তার লেখা পাঠাতে লাগলেন বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়। ১৯২১ সালে তার লেখা "খোদার দান" নামে একটি প্রবন্ধ ছাপা হয় মাসিক "সহচর" পত্রিকায়। পত্রিকার পাতায় ছাপাক্ষরে নিজের নাম দেখে কিশোর কবি আনন্দে হয়ে পড়েন আত্মহারা।
মঈনুদ্দীন বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লিখতে থাকেন এবং কবি-সাহিত্যিকদের সঙ্গে দেখা করে পরিচিত হতে থাকেন। এমন করে একবার দৈনিক "নবযুগ" পত্রিকা অফিসে গিয়ে বিদ্রোহী কবি নজরুলের সঙ্গে দেখা করে কথাবার্তা বলে খুব খুশী হন মঈনুদ্দীন। নজরুলের কাছে অনুপ্রেরণা পেলেন। প্রথম দেখেই নজরুলের কথা-বার্তা, চলন-বলন, পোশাক-আশাক সবকিছুই ভাল লাগে মঈনুদ্দীনের। কবি নজরুলকে ভালবেসে অনুকরণ করতে লাগলেন মঈনুদ্দীন। শুধু নজরুলের ব্যবহারিক বিষয়বস্তু অনুকরণ করেননি, মঈনুদ্দীন তার লেখালেখির বিষয়-আশয়ও নজরুলকে অনুসরণ করে লিখতে শুরু করেন।
প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে কলকাতা কর্পোরেশন শিক্ষক প্রশিক্ষণ মহাবিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। পরবর্তীকালে তিনি কলকাতা কর্পোরেশন ফ্রি প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতায় নিয়োজিত হন। বিশ বছর সেখানে কাজ করেন। শিক্ষকতাকালীন তিনি শিশুদের জন্য কিছু লেখালেখির প্রয়োজন মনে করেন।
তিনি ১৯২৩ সালে কবি মঈনুদ্দীন সাপ্তাহিক মুসলিম জগত পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হন।
৫০ ও ৬০-এর দশকে শিশুতোষ সাহিত্য রচনা করে প্রচুর সুনাম অর্জন করেন। কবির লেখা "কাঁনা বগির ছা" কবিতাটি বাংলাদেশের শিশুদের নিকট অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং "যুগশ্রেষ্ঠ নজরুল" নামক জীবনীটির জন্য তিনি বহুলভাবে সমাদৃত। পত্রিকায় "বিদ্রোহ" শীর্ষক একটি সম্পাদকীয় প্রকাশের দায়ে তাঁকে ছয় মাস কারাভোগ করতে হয়। হুগলি জেলখানায় থাকাকালীন তিনি বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে অন্তরঙ্গ হন। ১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের পর মুহম্মদ মঈনুদ্দীন ঢাকায় চলে আসেন। ১৯৪৮ সালে তিনি ঢাকায় "আলহামরা লাইব্রেরি" নামে একটি প্রকাশনা সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। এখান থেকে তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের জন্য পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন ও প্রকাশ করতেন।
কবি মঈনুদ্দীনের রচিত শিশুতোষ গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে মুসলিম বীরাঙ্গনা (১৯৩৬), আমাদের নবী (১৯৪১), ডা. শফিকের মোটর বোট (১৯৪৯), খোলাফা-ই-রাশেদীন (১৯৫১), আরব্য রজনী (১৯৫৭), বাবা আদম (১৯৫৮), স্বপন দেখি (১৯৫৯), লাল মোরগ (১৯৬১), শাপলা ফুল (১৯৬২)। তিনি অনেক কবিতা, গল্প ও উপন্যাস লিখেন। সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: কবিতা- পালের নাও (১৯৫৬), হে মানুষ (১৯৫৮), আর্তনাদ (১৯৫৮); উপন্যাস- অনাথিনী (সহচর পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত, ১৯২৬), নয়া সড়ক (১৯৬৭); ছোটগল্প- ঝুমকোলতা (১৯৫৬)। তিনি যুগস্রষ্টা নজরুল (১৯৫৭) শিরোনামে একটি জীবনীগ্রন্থ রচনা করেন।
১৯৬০ সালে "যুগশ্রেষ্ঠ নজরুল" বইটির জন্য তিনি ইউনেস্কো পুরস্কার লাভ করেন।
১৯৬০ সালে কবি শিশু সাহিত্যে বাংলা একাডেমী পুরস্কার লাভ করেন।
১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর তিনি সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য একুশে পদক লাভ করেন।
১৯৮১ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারি কবি মঈনুদ্দীন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

 ফজলুর রহমান, সৌদি আরব।
Cell Phone:00966534580722
Email: frahmanapple@yahoo.com
E: rahmanmedical.hall89@yahoo.com
Twitter:@Frahmantwittman

May Day-2017 আজ মহান মে ডে" - আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস

আজ পহেলা মে। মহান মে ডে। আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস। এ দিবস মে মাসের ১ তারিখে পালন করা হয়ে থাকে। এ দিনটি সারা বিশ্বেই পালিত হয়। দিনটি সরকারীভাবে ছুটির দিন। অনেক অনেক দেশে মে দিবসকে লেবার দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। আগের দিনে শ্রমিকদের কঠোর পরিশ্রম করতে হত, প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা কাজ করতে হত কিন্তু মজুরি পেত কম। সেজন্য শ্রমিকরা খুবই মানবেতর জীবনযাপন করতো। ১৮৮৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের একদল শ্রমিক দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজ করার জন্য আন্দোলন শুরু করেন, এবং তাদের দাবী কার্যকর করার জন্য তারা সময় বেঁধে দেয় ১৮৮৬ সালের ১লা মে।
কিন্তু কারখানার মালিকগণ দাবী মেনে নেননি। শ্রমিকরা যে মানুষ নামের কোন প্রাণী তা মালিকরা ভাবতো না তারা পশু মনে করতো শ্রমিকদের। তারপর ১৮৮৬ সালে সন্ধ্যাবেলা হালকা বৃষ্টির মধ্যে আমেরিকার শিকাগোর শহরে “হে” মার্কেট নামক এক বাণিজ্যিক এলাকায় শ্রমিকগণ মিছিলের উদ্দেশ্যে জড়ো হয় এবং অনেক বাক বিতন্ডা হওয়ার পর আন্দোলন রত সেই শ্রমিকদের ওপর পুলিশের গুলি চালানো হলে ১১ জন শ্রমিক মারা যায়।
শেষ পর্যন্ত অনেক ইতিহাস, অনেক কাহিনী,অনেক দরবার করার পর শ্রমিকদের "দৈনিক আট ঘণ্টা কাজ করার" দাবী অফিসিয়াল মেনে নেয়া হয় এবং স্বীকৃতি পায়। আর পহেলা মে বা মে দিবস প্রতিষ্ঠা পায় শ্রমিকদের দাবী আদায়ের দিন হিসেবে। বিশ্বব্যাপী আজও তা পালিত হয়।
সমগ্র বিশ্বে প্রায় ৮০টি দেশে ১লা মে জাতীয় ছুটির দিন। আরো অনেক দেশে এটি বেসরকারি ভাবে পালিত হয়।
তবে যুক্তরাষ্ট্র বা কানাডায় এইদিন পালিত হয় না। এ ছাড়া এইদিনে আরও কিছু ঘটনা রয়েছে যা আঞ্চলিক ভাবে হয়তো পালিত হয়।
আমেরিকা ও কানাডাতে অবশ্য সেপ্টেম্বর মাসে শ্রম দিবস পালিত হয়। সেখানকার কেন্দ্রীয় শ্রমিক ইউনিয়ন এই দিন পালনের উদ্যোগতা। হে মার্কেটের হত্যাকান্ডের পর আমেরিকার তৎকালিন প্রেসিডেন্ট গ্রোভার ক্লিভল্যান্ড যিনি আমারিকার ২২তম ও ২৪ তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি মনে করেছিলেন ১লা মে তারিখে যে কোন আয়োজন হানাহানিতে পর্যবসিত হতে পারে। সে জন্য ১৮৮৭ সালেই তিনি নাইটের সমর্থিত শ্রম দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেন এব্বং সেপ্টেম্বর মাসে শ্রম দিবস পালন করেন মে মাসে নয়।
বাংলাদেশেও পালিত হয় ‘মহান মে দিবস’। কিন্তু আমাদের দেশের দিনমজুর/ শ্রমিকগণ সঠিক মূল্য পায় না। যাদের মাথার ঘাম/রক্ত বেয়ে মাটিতে পরে তার পরও তাদের শ্রমের মূল্য হয় মূল্যহীন। সবাই শুধু ভাষণ-বক্তব্য দিয়ে মুখে ফেনা তুলে। কিন্তু শ্রমিকের ভাগ্য বদল হয় না। শোষণ চলে ঠিকই। আজ শ্রমিকরা তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। দেশের অর্থনীতির উন্নয়নের মূল ব্যাকবোন এসব শ্রমিক। প্রবাসে আমাদের প্রচুর সংখ্যক শ্রমিক ভাই-বোনরা বঞ্চনার শিকার হন। কিন্তু বাংলাদেশ এম্বাসী কতটুকু সেটার সমাধান দিতে পারে? কিছুই না। অথচ ইন্ডিয়া,পাকিস্তান,ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম সহ শত শত দেশের এম্বাসি কত শক্ত একশন নেয় তাদের জনগণের নানা সমস্যার জন্য। বাংলাদেশ সেখানে মিচি বিড়ালের মত গোজামিল দিয়ে বসে থাকে। আর শ্রমিকরা নিরবে চোখের পানি ফেলে জেলে যায় নয়তো দেশে ফেরত চলে যায়। সরকার কতটুকু তার সমাধান করে?????
প্রবাসী শ্রমিকরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।আমরা প্রবাসে কঠুর পরিশ্রম করে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা চাঙ্গা করছি। বাংলাদেশের সরকার আমাদের টাকায় চলে। আমাদের রোজগার করা টাকায় তাদের বেতন চলে, তাদের সংসার চলে,তাদের বড় বড় অট্টালিকা নির্মাণ হয় রাজধানী ঢাকায়, তারা বউ নিয়ে বিলাসবহুল রাজপ্রাসাদে আর শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গাড়ীতে ঘুরে, নৌবিহারে যায়, হানিমুনে যায়। কোথা হতে আসে এত টাকা???? এসব টাকা আসে দেশী-বিদেশী বাংলাদেশী শ্রমিকের রক্ত বিসর্জনের মাধ্যমে। কাজেই তাদের দিকে একবার সুদৃষ্টি দিন। এদের কথা আমাদের অবশ্যই ভাবতে হবে।
নচেৎ জাতি হিসেবে আমরা পিছনেই থেকে যাবো। সকল প্রবাসী ভাই সহ দেশবাসী সবাইকে ধন্যবাদ।

ফজলুর রহমান, সৌদি আরব।
Cell Phone:00966534580722
Email: frahmanapple@yahoo.com
E: rahmanmedical.hall89@yahoo.com
Twitter:@Frahmantwittman