Saturday, June 3, 2017

Ramadan Iftar (রোজার ইফতার)

"রোজার ইফতার"
================
বাঙালিরা খাবারে সৌখিন জন্মাবধি। যুগে যুগে বাঙ্গালির প্রশংসা আছে ভোজন-বিলাসে। রোজায় ইফতারেও বেশ সৌখিন বাংলার জনগণ। ঐতিহ্যবাহী পুরান ঢাকার ইফতার মানেই চকবাজারের লোভনীয় খাবার। ঢাকার চকবাজারের জহুরের নামাজের পরই পরই শুরু হয়ে যায় বেচা-বিক্রী। চকবাজারের শাহি মসজিদকে ঘিরেই বসে ইফতারের সব দোকান। কোন রাস্তাই বাদ যায় না। শত শত দোকান সাজিয়ে বসে ইফতারীর পসরা। সর্ব সাকুল্যে কম করে হলেও পাঁচ শত এর অধিক ইফতারের দোকান বসে প্রতিদিন এখানে। কথিত আছে, প্রায় ১২৬ বছর আগে কালেম মিয়া নামের এক বাবুর্চি চকবাজারে প্রথম মুখ্রুচক এই খাবার তৈরি করেন। পরবর্তীতে বংশানুক্রমে তাঁর পুত্র আলম থেকে সালেকিন মিয়ার হাত হয়ে এখন এই খাবার সারা চকবাজার ইফতার মার্কেটে ছেয়ে গেছে। চক বাজারের ইফতারির বেশ সুনাম রয়েছে দেশ জুড়ে। ইফতারির ঐতিহ্য ধরে রেখেছে রাজধানীর পুরানো ঢাকার চকবাজার।
এখানকার বাহারি ইফতারের মধ্যে রয়েছে "শিক কাবাব"।
মূল্য একটু বেশী হলেও ঐতিহ্যবাহী এই ইফতারি বাজারের জৌলুস কিছুটা কমতে থাকলেও নামডাকের কারণে অনেকেই দূর-দূরান্ত থেকে চকবাজারেই ইফতারি কিনতে বেশী স্বাচ্ছন্দবোধ করেন।
এ ছাড়া আনার-আনারস-পেঁপে থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের তাজা ফল, পিঠা- পুলি-পায়েস, মিষ্টিসহ নানা সুস্বাদু খাবার সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা।
সেই পরিচিত হাঁক-ডাক। ভিড়ের ভিতর থেকে বিক্রেতার কণ্ঠস্বর কানে ভেসে আসে বাহারি ইফতারির নাম- কাবাব, হালিম দইবড়া বোম্বে জিলাপি, খাসির হালিম, খাসির জালি কাবাব, রেশমি কাবাব,খাসির রোস্ট, বিফ চপ, চিকেন ফ্রাই, গ্রিল চিকেন, খাসির মগজের স্যান্ডউইচ, ফুল ডিমের চপ, বিফ কোপ্তা, ফুলুরি, টিক্কা কাবাব, সুতি কাবাব, জালি কাবাব, শাকপুলি, টিকা কাবাব, আস্ত মুরগির কাবাব, মোরগ মসল্লম, বঁটি কাবাব, কোফতা, চিকেন কাঠি, শামি কাবাব, শিকের ভারী কাবাব, ডিম চপ, কাচ্চি, তেহারি, মোরগ পোলাও, কবুতর ও কোয়েলের রোস্ট, খাসির রানের রোস্ট, দইবড়া, মোল্লার হালিম, নুরানি লাচ্ছি, পনির, বিভিন্ন ধরনের কাটলেট, পেস্তা বাদামের শরবত, লাবাং, ছানামাঠা, কিমা পরোটা, ছোলা, মুড়ি, ঘুগনি, বেগুনি, আলুর চপ, পেঁয়াজু, বোম্বাই রোস্ট,ফালুদা ও লাচ্ছি” আরো কত কি।
স্পেশাল রয়েছে ----- " বড় বাপের পোলায় খায় ”---
এছাড়া ----- ছোলা, পেঁয়াজু, বেগুনি, হালিমের পাশাপাশি রেস্তোরাঁয় রয়েছে লাচ্ছা পরোটা, পাঞ্জাবি চিকেন, চিকেন মাসাল্লা, চিকেন তাওয়া ড্রাই, প্রন টোস্ট, চিকেন বড়া কাবাব, বিফ রেনডাং, বিফ তাওয়া ড্রাই, সেই সাথে ফিরনি ও ঘিয়ে ভাজা জিলাপি।
স্বাগত বাঙালির ভোজন-বিলাস আর রসনা তৃপ্তি। সবাইকে ধন্যবাদ এবং পবিত্র রমজানের মোবারকবাদ।

 ফজলুর রহমান, সৌদি আরব। 
Email: frahmanapple@yahoo.com

Friday, May 26, 2017

Ramadan Mobarak -2017(মোবারক হো পবিত্র মাহে রমজান)

আজ ২৭/৫/২০১৭ রমজানের প্রথম দিন। সৌদি আরব সহ আরব বিশ্বের সকল দেশে আজ থেকে মাহে রমজান শুরু হয়েছে। আরবি শব্দ রামাদ্বান থেকে এসেছে রমজান বা রামাদান। রমজান ইসলামি পঞ্জিকা হিসেবে নবম মাস। এ মাসে বিশ্বব্যাপী মুসলিমগণ ইসলামিক উপবাস সওম পালন করে থাকেন। রমজান মাসে রোজাপালন ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের মধ্যে তৃতীয়তম। রমজান মাস চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে ২৯ অথবা ত্রিশ দিনে হয়ে থাকে যা নির্ভরযোগ্য হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। বাংলাদেশ সহ ভারত উপমহাদেশের এটা দেশে “রোজা” নামে পরিচিত। রমজান মাসের ফজিলতের মাধ্যমে তামাম পৃথিবীর মুসলিম সম্প্রদায় মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে থাকেন। রজানের প্রথম দশদিন রহমতের, দ্বিতীয় দশদিন মাগফিরাত ও তিৃতীয় অংশ হল নাজাতের। রহমত, মাগফিরাত এবং মুক্তির পয়গাম নিয়ে আমাদের মুসলিম উম্মাহর সামনে হাজির হয় পবিত্র মাস মাহে রমজান। রমজান মানুষের পশুত্বকে খতম করে জাগ্রত করে মনুষ্যত্বকে।
রোজা ফরজ হয় এই রমজান মাসেই। রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের মাস এই রমজান। এই মাসে জান্নাতের সকল দরজা খুলে দেওয়া হয়। আর জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়। শুধু মাত্র রমজানের জন্য বাকী এগারো মাস জান্নাতকে সাজানো হয়ে থাকে। এই মাসে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পথভ্রষ্ঠ শয়তানকে বেঁধে রাখেন, যাতে সে মুমিনদের কোন ক্ষতি করতে না পারে। এ মাসের একটি ফরজ আদায় অন্য মাসের ৭০টি ফরজ আদায়ের সমান। আর একটি নফল অন্য মাসের একটি ফরজের সমান। এই মাসে যে কোন দান-সদকা, ভাল কাজের প্রতিফল আল্লাহপাক ৭০গুন করে দিয়ে থাকেন। যা অন্য মাসে মাত্র ১০গুন। জান্নাতের একটি দরজার নাম রাইয়ান। রোযাদারকে ঐ দরজা দিয়েই ডাকা হবে। যে রোজাদারগণ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে সে কখনও পিপাসিত হবে না।
রোজা বুকের ভেতরকার জটিলতা এবং পেরেশানিগুলো দূর করে দেয়। দেহ ও আত্মার ওপর শান্তির প্রভাব ফেলে, এটিও রোজার অন্যতম একটি ফজিলত।
আসলে রমজানের এ বাহ্যিক উপকারিতার কথা আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞান বেশ কিছুকাল পূর্বেই প্রমাণ করেছে। আল্লাহ পাক আমাদের জন্য এ বিধানটি দিয়েছেন ফলে এতে অবশ্যই কল্যাণ নিহিত রয়েছে।
আর একটি বিষয় হচ্ছে রমজান এলেই শুধু কোরআনের মাহাত্ম্য বা মর্যাদা বেড়ে যায়। বাকি মাসগুলো গুরুত্ব দেই না। রমজানে আমরা নিজেকে সংযত রাখার চেষ্টা করে থাকি, রমজান বিদায় নিলে আবার খারাপ কাজে ঢুকে পড়ি যা মোটেও সঠিক নয়।
পরিশেষে সবাই আমরা রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করে চলি এবং একমাস রোজা পালন করি সেই সাথে রমজানের পরেও আমরা সবাই যেন ইবাদত-বন্দিগির করি সেদিকেও আমাদের মনোযোগ দেয়া জরুরী। আল্লাহপাক আমাদের সবাইকে সেই তৌফিক দান করুক। আমিন।

(Sahorail Mela-2017) "জমে উঠেছে সাহরাইল সিদ্ধাবাড়ী মেলা-২০১৭"

মেলা সামাজিক আনন্দ-বিনোদন ও ধর্মীয় উৎসবের কারণে একটি স্থানে অনেক মানুষ একত্রিত হয় । মেলা বিভিন্ন রকমের হতে পারে । মেলার সঙ্গে গ্রামীণ জনগোষ্টীর কৃষ্টি ও সংস্কৃতির যোগাযোগ থাকে । বাংলার এই সংস্কৃতিতে থাকে সব ধর্মের মানুষের সংস্কৃতির সমন্বয় । মেলাকে ঘিরে গ্রামীণ জীবনে আসে প্রানচাঞ্চল্য। আশে পাশের ২০/৩০ গ্রামের লোকজন মেলায় সমাগম ঘটে।

মানিক্গঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলায়  সাহরাইল সিদ্ধাবাড়ী মেলা-২০১৭ একটি পুরাতন মেলা। এটি শায়েস্তা ইউনিয়নের সাহরাইল বাজারে পাশে মিলে থাকে। স্থানীয় সিদ্ধার্থীরা মেলার আয়োজন করে থাকে। এ মেলাটি ৩০০ থেকে ৪০০ বছর যাবৎ উদযাপিত হয়ে আসছে বলে ধারণা করা হয়ে থাকে। জ্যৈষ্ঠ মাসে মেলাটি শুরু হয় এবং পনের দিন থেকে এক মাস ব্যাপী মেলাটি চলে। এই মেলায় প্রধান আকর্ষণ সার্কাস, পুতুল নাচ, এবং নাগরদোলা। যাত্রা গানেরও আয়োজন করা হয়।
এছাড়া বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী মেলায় বেচা-বিক্রী হয়। রাঁধুনীর মসলার কাঁচামাল ধনিয়া,শুয়াজ, জৈন, তরিতরকারী কাটাকাটির দা-বটি,বাচ্চাদের খেলনা সামগ্রী, বেতের তৈরী ধামা-কাঠা এখানে পাওয়া যায়। বেদে বহরের চমৎকার আয়োজন মেলাকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। মহিলাদের ভীড়ে লাল,নীল শাড়ির ছোঁয়ায় বেদে বহরের অলি গলি রঙিন হয়ে উঠে। মিষ্টির দোকান গুলোও থাকে লোকজনে ভরপূর। রসগোল্লা, চমচম, কালো জাম, মোহনভোগ সহ বাহারি জিলেপীও মিষ্টির দোকানের গলি থাকে পরিপূর্ণ। সেই সাথে মৌমাছিদের সরব আনাগোনা আর ভন ভন শব্দ তরঙ্গ মেলাকে ভিন্ন এক মাত্রার যোগান দেয়। গ্রামীণ মৃৎশিল্প ও কারুপণ্যের বিক্রীও মেলার আরেক আকর্ষণ। সবচেয়ে মজার দৃশ্য সাধু-সন্যাসিদের এরিয়া। বিভিন্ন
বয়ষ্ক সাধুদের সাথে ক্ষুদে সাধুদের সমাগম হয় সাহরাইল মেলায়।
সব মিলে সাহরাইল মেলা-২০১৭ এবার বেশ জাঁকজমকপূর্ণ। সবাই আনন্দঘন মূর্হুতে কাটাবে, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে মেলায় যাবে,রাস্তায় থাকবে বাইসাইকেল,মোটর সাইকেল, রিকশা-অটোর দৌড়াদৌড়ি। এমন দৃশ্য সত্যি মনকে দোলা দেয়। এই প্রবাস জীবনে একবার হলেও এক পলক তাকাতে ইচ্ছে জাগে গ্রামীণ মেলার দিকে। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে শেষ করছি। ধন্যবাদ।

Thursday, May 25, 2017

Fazlur Rahman's Poem (ফজলুর রহমান কবিতা)

"রূপসী কণ্যা"
---ফজলুর রহমা
রূপসী উড়ায়ে লাল বেনারসি শাড়ির আঁচল,
কাশবনের কণ্যা এলোমেলো কেশ উড়ে চঞ্চল।
হাসিতে তার মুক্তা ঝরে মায়াবী সেই চেহারা,
লাল ঠোঁটে ঝিলিক ছড়ায় মসৃণ আমলকী বহেরা।
তেমনি দেখেছি তারে প্রিয়ার সেই কালো চোখ,
যেমনি দেখেছে জীবনানন্দ মায়াভরা বাংলার মুখ।
আমি বার বার ফিরিতে চাই আমার প্রেমের বঙ্গদেশে,
যেখানে মিষ্টি গান গায় কোকিল ধান শালিকের বেশে।
পাগল করা ফুলের হাওয়া যে দেশে অবিরাম বয়ে যায়,
মনের মানসী লাউয়ের শাক নিয়ে বসে সুধায় আমায়।
আমি তার জন্য প্রহর গুণে যাই বছর-মাস-দিন,
সে হবে মোর মনের আয়নার একজন শারমিন।
সৌদি আরব-২৪/৫/২০১৭


"বসন্ত দিনে"
------ ফজলুর রহমান
কত ফুলের মিলন মেলা আজি বসন্ত দিনে,
প্রেমের অমৃত সুধা মিলবে কেমনে তুমি বিনে।
আমি জেগে রই রাত্রির ঘোর অন্ধকারে চেয়ে থাকি,
করবীর মালা নিয়ে তোমার আসতে আর কত বাকী।
বসন্তের দমকা হাওয়ায় পুস্প-পাপড়ি খসে পড়ে যায়,
প্রিয়তমার গাঁথা ফুলের মালা আমায় কখন যে পড়ায়?
আমি চিন্তিত আমি ক্লান্ত প্রেমের পথিক হৃদয়ে ভয়,
মালিনীর মালা রহিবে মোর গলে তাইতো মনে হয়।
আমার প্রতীক্ষা আমার অপেক্ষা এ শুধু তোমার জন্য,
এ জীবনে তোমাকে হাড়ালে প্রেমিকের বুক হবে শূণ্য।
হাড়াতে চাই না তোমায় চলে এস কৃষ্ণচূড়ার ছায়ায়,
বসন্তের পুষ্প মঞ্জুরী মেখে তাকাবো শ্যামল মায়ায়।
তুমি কোথায় শিমুল পলাশের গুচ্ছ নিয়ে আছ বসে,
আমার হাতে বকুলের মালা তাতে চাঁপা ফুল যায় খসে।
সৌদি আরব-২৩/৫/২০১৭

"শ্রাবণের ভালবাসা"
----- ফজলুর রহমান
শ্রাবণের ঝিরিঝিরি হাওয়া আর হাসনাহেনার সুভাষ,
বিষাদে জ্বলে যাওয়া প্রেমিক সেও পায় বাঁচার আচ্ছাস।
পলে পলে ফিরে ফিরে সুগন্ধী গন্ধরাজের মিষ্টি গন্ধ,
পাগল করে হদয় আমার মনটা হয়ে যায় স্নিগ্ধ।
রক্তজবা আর মল্লিকার রক্তিম আভায় রঙিন তুমি,
যদি না পেতাম তোমার পরশ অন্তর হত মুরুভূমি।
তুমি আছ বলে তারারা খেলা করে নীল আসমানে,
ফুলেরা ফুটে বলে এত সৌন্দর্য থাকে ওই বাগানে।
আলো আর আলেয়া হয়ে এলে তুমি আমার জীবনে,
জলন্ত প্রেমের প্রদীপ নিভিতে দেব না সেই মরণে।
ভালবাসা অমর অবিনশ্বর হয় এই ধরাধামে,
মানব কুলে জন্ম আমার প্রেম রবে জনমে জনমে।
ভুলিতে চাই না আমি সুন্দর তোমার ভালবাসা,
ক্ষণে ক্ষণে মনে মনে থাকিবে শুধুই প্রত্যাশা।
সৌদি আরব-২১/৫/২০১৭

"ভালবাসার গল্প"
---- ফজলুর রহমান
কুয়াসাছন্ন সকালে মেহেদি রাঙানো পায়ের ঝলকানি,
প্রিয়তমা শারমিনকে যেভাবে দেখেছিলাম সেই কাহিনী।
নুপুর ছিল সাদা পায়ে ঝুমুর ঝুমুর চমৎকার শব্দ,
হৃদয় আমার পুলকিত হয়ে উঠে মুগ্ধ আমার চিত্ত।
সুধালাম তাকে মনের আবেগ ঢেলে বলিলাম কথা,
জানিয়ে দিলাম শত জনমের আমার মনের ব্যথা।
শারমিন শান্ত এবার, কহে মোরে ভালবাসতে পার?
যদি ব্যর্থ হও নিটোল ভালবাসায় এই দুনিয়া ছাড়।
কহিলাম তাকে আত্মার ভাষা যা ছিল আমার মনে,
অনেক স্বপ্ন তোমাকে নিয়ে জানালাম কানে কানে।
স্বপ্ন হল সত্যি দুজনার সুখের মিলনের যাত্রা শুরু,
নিয়তি জানে কি হবে পর জনমে কলিজা দুরু দুরু।
শারমিন ভাসে স্বপ্ন ভেলায় তাকিয়ে মিলন মেলায়,
কত দিন আর ভাগ্যের হায়াত প্রেম ঢাল এ বেলায়।
সৌদি আরব-২১/৫/২০১৭

Baking Mango (আম কুড়ানো)

ঝড়ের দিনে মামার বাড়ী
আম কুড়াতে সুখ,
পাকা জামের মধুর রসে
রঙিন করি মুখ
      ---- জসীম উদ্দিনের
পল্লিকবি জসীম উদ্দিন চমৎকার করে ফুটিয়ে তুলেছেন আম কুড়ানোর গল্প তার লেখার মাঝে। প্রাইমারী স্কুলে কে না পড়ছে এ কবিতাটি। আম কুড়ানো শৈশবের এক মজার স্মৃতি। সবার জীবনেই এ ঘটনা ঘটেছে কম বেশী। ছেলে বেলার স্মৃতি গুলি  বড়ই মনোরম মনে হয়। অনেক কথাই আজ  ভুলে বসেছি। তারপরও কিছু কথা বলার সাধ জাগে, স্মৃতিচারণ করতে ভাল লাগে। কারণ ছোট বেলা সবারই ভীষণ এক দুরন্ত সময়। সব কিছুই তখন নতুন নতুন ভাব। সব কিছু খেতে ভাল লাগে। মুখে রুচি থাকে যথেষ্ট ভাল আর খারাপ যাই হোক সবই খেতে ভাল লাগে। সেই সময় কে শুনে বাপ-মায়ের কথা। আম কুড়াতে চলে গেছি কত জায়গায় জঙ্গলের গভীরে গিয়েও আম কুড়িয়েছি আমার নানা বাড়ীর পাশে তারা ভাইয়ের আমগাছ ছিল অনেক বড় বড় ফজলি আমের গাছ ছিল বেশ কয়েকটি ঝরের দিনে সেই বাড়ীতে যেতাম আম কুড়াতেবেতের ঝুর ছিল বিরাট তার নিচে চলে যেতাম আম কুড়াতেআমার নানীর একটি কাঠের আলমারী ছিল আম কুড়িয়ে সেই আল্মারীতে  ভরে ফেলতামআরও কত বাড়ীতে যেতাম আমার জন্য ছোট বেলার এ কাহিনী গুলি মনে হলে খুব ভাল লাগে। কাঁচা আম চাকু দিয়ে কেটে লবন-লঙ্কা মেখে  একসাথে বন্ধুদের নিয়ে খাওয়া সেকি আর ভুলবার বিষয়? নিজের বাড়ীর না হোক মহল্লায় তো আর আম গাছের কমতি নেই। সবার বাড়ীতে দুএকটি আম গাছ থাকা তো মামুলি ব্যাপার। ব্যাস... মার ঢিল, নয়তো গাছ বেয়ে বেয়ে মগ ডালে গিয়ে পেরে নিয়ে আসতাম আম। এদিকে বাড়ীওয়ালার সাথে বিড়ি-সিগারেট দিয়ে ভাব জমাতাম সেই ফাঁকে আম চুরি চলতে থাকতো। এসব আজ কল্প কাহিনী মনে হলেও  এক সময়ে ছিল রিয়ালিটি। খুবই মজাদার কাহিনী।  ছাত্র জীবনে বন্ধুদের নিয়ে কত কিছুইতো করেছি। শুধু আম কেন ডাব কি কম পান হয়েছে? নারিকেল বৃক্ষে রশি বেঁধে নামিয়ে দেয়া হত একেবারে নিচে। আর ডাবেরা এসে যেত হাতের মুঠে। হা হা হা। ডাব চুরির সেই সব দিন আজ কোথায়!!! সবার শৈশবেই একটু আধটু এসব হয়ে থাকে। ডোন্ট বি  মোর অনেস্টআমরা কেউ ফেরেশতা নই।


সবশেষে সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে আজকের মত বিদায়।


Sunday, May 14, 2017

বাদল দিনের খিচুড়ি --------ফজলুর রহমানের কবিতা-৩

"বাদল দিনের খিচুড়ি"
--------ফজলুর রহমান।

বাদল ঝরা বৃষ্টির রজণীর স্বাদ নিতে
খিচুড়ি-গোশত-চাটনির মজা পেতে
কেউ ব্যাকুল সরিষার তেলে পেয়াজ ডলে,
বুড়ো দাদু শক্ত হাতে আপন পাতে লঙ্কা ডলে।
আমচুর-জলপাই খাই আর না পাই,
আজকের বর্ষায় দাদীদের জামানায় ফিরে যাই।
বিরিয়ানি-বোরহানি-জাফরানি আজকে নাহি চাই।
খানদানী পোলাও সবাইকে ভুলাও চাহিবে না ঘি,
মেঘের দিনে টমেটো-সালাদের মজা দেবে কি ঘি?
চাসনে তোরা কোপ্তা-কোরমা খেয়ে নে আজ খিচুড়ি,
বাদল বেলায় চাদর কাঁধে হাটে যায় কোন বেপারী?


 সৌদি আরব-১৪/৫/২০১৭

"আজি হতে ৩২ বছর আগে" - ফজলুর রহমানের কবিতা-২ Fazlur Rahman's Poem

আজি হতে ৩২ বছর আগে

       ------ফজলুর রহমান

আজি হতে ৩২ বছর আগে,
কে কোথায় ছিলে বন্ধুরা জেগে।
১৯৮৫ সালের ব্যাস ভাবো কি মনে
এতটা বছর পেরিয়ে রবে কি স্মরণে?
চারিগ্রাম হাইস্কুলের সবুজ সেই মাঠে,
যে স্মৃতি তাড়া করে নুরুনী গঙ্গার ঘাটে।
বিদ্যালয়ের পিছনেই তো ওই নদী,
সাথীরা মিলে দিন রাত করেছি কত ফন্দী।
কত হাসি কত গান বেজেছে আবার কি সম্ভব,
আজও কি এতটা পথ পেরিয়ে ভুলেছি সে সব?


সৌদি আরব-১০/৫/২০১৭