Wednesday, October 26, 2016

“মুক্ত আলোচনা"


প্রকৃতির অপরূপ লীলা ভূমি বাংলাদেশ।কিন্তু আজ উজাড় হচ্ছে বনদেশে আজকাল বিলীন হচ্ছে চির সবুজের সমারোহনেই ততটা এভারগ্রীন বা চিরহরিৎ অভয়ারণ্যসবুজ-সজীব-সতেজ বন বনানী তেমন চোখে পরে নাপাখ-পাখালীর কল-কাকলী,কাকের কা কা ডাক, সেতো  স্বপ্নেও ভাবা যায় না এখনময়না,তোতা,শালিক,ডাহুক,ফিঙ্গে,ঘুঘু,মাছরাঙ্গা, শ্যামা,কোয়েল,কাকাতুয়া, ওদের তো দেখাই পাই নাবাংলার মুখ উজ্জ্বল করে জাতীয় পাখির খাতায় নাম লেখালো যে দোয়েল আজ সে কোথায়?  আমার কৈশোরে কাজই ছিল দোয়েল পাখির ডিম খুঁজ করাবাদামি-বেগুন-সবুজ আর কালো রঙের ছিটা দেখতাম দোয়েলের ডিমেমোটা গাছের খোড়লে বাসা তৈরী করে দোয়েলদোয়েলের বাসায় পেয়ে যেতাম এক জোড়া ডিমডুমুরের দুপাতার এক কক্ষ বিশিষ্ট ঘর বানায় টুনা আর বধূ টুনি এদের কাছ থেকেও পেতাম মাত্র দুটি  ডিম টুনি বড়ই কৃপন, নাকি সৃষ্টি কর্তার হুকুম জারি দুডিম পাড়ার জানি নাআর এসব ডিম যোগারে আমার সঙ্গী ছিল ফুফাতো বোন শেফালি বেগমনানা বাড়ীর নারিকেল গাছে দেখতাম শত শত আর্কিটেক্ট  বাবুইবাবুই পাখির কিচির মিচির শব্দে কান ঝালাপালা হয়ে যেতকি নিঁখুত নির্মাণশৈলী তার বাসার কি চমৎকার সেই বুননছোট ছোট বন্ধুরা বলতাম বাবুই পাখির বাসার বুনন খুলতে পারলে নাকি সোনা পাওয়া যাবে দুতিন দিন ধরে সোনার হরীণের প্রত্যাশায় খুলতাম সেই বাসা ধুর ছাই! সোনা পেলাম কৈ?বাবুই পাখি নিয়ে তাইতো কবি  রজনীকান্ত সেনলিখেছেন
বাবুই পাখিরে ডাকি, বলিছে চড়াই-
কুঁড়ে ঘরে থেকে কর শিল্পের বড়াই;
……………………………
বাবুই হাসিয়া কহে- সন্দেহ কি তায়?
কষ্ট পাই, তবু থাকি নিজের বাসায়
।।

আজ সে সব পাখি বিলীন প্রায়  চৈতালী ফসলের মাঠ জুড়ে থাকতো ধবল বকনদীর বাঁকে ছোট মাছ শিকারে ধূসর রঙের যে বক দেখতাম তাকে ডাকতাম কানি বকবড় বড় বৃক্ষের মগ ডালে এসে বসতো অতিথি পাখিকিছু ভদ্রবেশী বন্দুকধারী শিকার করতো সে সব অতিথি পাখিঅবশ্য সেজন্য মানুষের গালমন্দও খেতো দল বেঁধে আকাশে উড়তো কত সব পক্ষীকূল এক সময় গ্রাম বাংলার নদী-নালা- খাল-বিল,পুকুর-জলাশয়
ভড়া ছিল পক্ষীকূলেআজ সেসব কোথায়? দেখা পাইনা গাংচিলেরশকুন,চিল অদৃশ্য পেঁচারাও পালালো যেন কোথায়! বসন্তের কোকিলও কমে গেছেকোকিল ডাকা ভোরের আওয়াজ আর শোনতে পাইনা শুধু পাখি কেন কত কিছুই তো আজ বিলীন-বিলুপ্তিহারিয়ে যাচ্ছে কত কিছু সে ভাবনা কে ভাবে ইলিশে নেই স্বাদ-গন্ধ, মাশ কলাইয়ে নেই সু-ঘ্রাণসবজিতে নেই সজীবতা, নেই সুস্বাদআছে কেবল বিষ আর হাইব্রিডফল ফলাদি তে নেই এনার্জি, নেই মিষ্টি স্বাদআছে শুধু কেমিকেল, কার্বাইডআজকাল অনেকেই নিজ বাড়ীতে ফলবান বৃক্ষ লাগাতে পছন্দ করে না। লজ্জা পায়।লোকে নাকি ছোট ভাববে!! ছিঃ কি বিশ্রী কথা! নিজের বাড়ীতে বৃক্ষ রোপণ নাকি ছোট কাজ? বাড়ীর আঙিনায় থাকবে হাজারো ফুল-ফলের বৃক্ষরাজি

 নিজের গাছের ফল নিজে খাবো,
  বিষাক্ত ফল  কিনে না আনবো

 এই শ্লোগান সবার হওয়া উচিৎ




1 comment: