খাজা
সলিমুল্লাহ বা নবাব সলিমুল্লাহ বা
স্যার সলিমুল্লাহ্ ছিলেন ঢাকার নবাব। নবাব সলিমুল্লাহ-র জন্ম
৭ই জুন ১৮৭১। স্থানঃ ঢাকার ঐতিহাসিক
(লাল রঙের) আহসান মঞ্জিল । মৃত্যু ১৬ই জানুয়ারী
১৯১৫। পিতা নবাব
খাজা আহসানউল্লাহ। দাদা নবাব খাজা আব্দুল গনি। দাদি ইসমতুন্নেসা। নবাব সলিমুল্লাহ’র নামেই
প্রতিষ্ঠিত হয় “স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ” (মিটফোর্ড হাসপাতাল)। নবাব
সলিমুল্লাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের
জন্য ঢাকার রমনা এলাকায়
পৈতৃক সম্পত্তি থেকে কিছু জমি দান করেন এবং তার পিতার নামে আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল
(বর্তমান বুয়েট) প্রতিষ্ঠা করেন।১৭৫৭ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত
ব্রিটিশরা এ দেশে অনেক নির্যাতন করেছে। তাদের রাজা ও জমিদাররা অত্যাচার এবং জুলুম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নিজ
নিজ স্থানে ছিল প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু নবাব
সলিমুল্লাহর পরিবার ছিল সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তারা জনতাকে ভালবাসতেন।শৈশব থেকেই নবাব সাহেব ছিলেন অত্যন্ত ধর্মভীরু।
১৯০৩
খ্রীষ্টাব্দে বড় লাট “লর্ড কার্জন” যখন ঢাকা সফরে
আসেন তখন নবাব সলিমুল্লাহ বাংলার ততকালীন (পূর্ব
বঙ্গ) বিভিন্ন সমস্যাগুলো লাট সাহেবের কাছে তুলে ধরেন। নবাব
পরিবারের সন্তান হয়েও সবার সাথে ছিল তার একটা দহরম-মহরম
ভাব। সাধারণ মানুষের দুঃখ-কষ্ট বুঝতে চেষ্টা করতেন।তিনি
প্রচুর দান-খয়রাতও করতেন। নবাব সলিমূল্লাহ-ই সর্বপ্রথম ঢাকাবাসীর জন্য সুপীয় পানি, বিদ্যুৎ এবং টেলিফোন ব্যবস্থা
চালু করেন। এবং তিনি ঢাকাকে একটি আধুনিক শহর তৈরীতে মনোনিবেশ করেন। তিনি ১৯০৫ সালে
পূর্ব বঙ্গকে দুই ভাগে ভাগ করে, ঢাকা, রাজশাহী,
চট্টগ্রাম ও আসাম নিয়ে ঢাকাকে রাজধানী করেন। নবাব
স্যার খাজা সলিমুল্লাহ বাহাদুর ছিলেন ঢাকার চতুর্থ নবাব। ১৮৯৩ হতে ১৮৯৫ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন “ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট” পরবর্তিতে ১৯০১ সালে পিতা “নবাব খাজা আহসানউল্লাহ-র” মৃত্যু হলে সলিমুল্লাহ নবাব পদ লাভ করেন।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা
নিয়ে ততকালীন হিন্দু সমাজ এবং বড় লাটের
সাথে তার বিরোধ হয়। সে
কারণে ১৯১৫ সালের ১৬ জানুয়ারিতে কলকাতায় ব্রিটিশরা ষড়যন্ত্র করে সলিমুল্লাহকে বিষ
প্রয়োগে হত্যা করে। এমনটাই ধারনা করেন ততকালীন বঙ্গদেশের সাধারণ জনগণ। নবাব সলিমুল্লাহ-র মরদেহ
ঢাকার সদরঘাটে আনার পর কাউকেই দেখতে না দিয়ে লাশ দাফন করা হয়। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৪৪ বছর।
No comments:
Post a Comment