Monday, May 1, 2017

May Day-2017 আজ মহান মে ডে" - আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস

আজ পহেলা মে। মহান মে ডে। আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস। এ দিবস মে মাসের ১ তারিখে পালন করা হয়ে থাকে। এ দিনটি সারা বিশ্বেই পালিত হয়। দিনটি সরকারীভাবে ছুটির দিন। অনেক অনেক দেশে মে দিবসকে লেবার দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে। আগের দিনে শ্রমিকদের কঠোর পরিশ্রম করতে হত, প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা কাজ করতে হত কিন্তু মজুরি পেত কম। সেজন্য শ্রমিকরা খুবই মানবেতর জীবনযাপন করতো। ১৮৮৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের একদল শ্রমিক দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজ করার জন্য আন্দোলন শুরু করেন, এবং তাদের দাবী কার্যকর করার জন্য তারা সময় বেঁধে দেয় ১৮৮৬ সালের ১লা মে।
কিন্তু কারখানার মালিকগণ দাবী মেনে নেননি। শ্রমিকরা যে মানুষ নামের কোন প্রাণী তা মালিকরা ভাবতো না তারা পশু মনে করতো শ্রমিকদের। তারপর ১৮৮৬ সালে সন্ধ্যাবেলা হালকা বৃষ্টির মধ্যে আমেরিকার শিকাগোর শহরে “হে” মার্কেট নামক এক বাণিজ্যিক এলাকায় শ্রমিকগণ মিছিলের উদ্দেশ্যে জড়ো হয় এবং অনেক বাক বিতন্ডা হওয়ার পর আন্দোলন রত সেই শ্রমিকদের ওপর পুলিশের গুলি চালানো হলে ১১ জন শ্রমিক মারা যায়।
শেষ পর্যন্ত অনেক ইতিহাস, অনেক কাহিনী,অনেক দরবার করার পর শ্রমিকদের "দৈনিক আট ঘণ্টা কাজ করার" দাবী অফিসিয়াল মেনে নেয়া হয় এবং স্বীকৃতি পায়। আর পহেলা মে বা মে দিবস প্রতিষ্ঠা পায় শ্রমিকদের দাবী আদায়ের দিন হিসেবে। বিশ্বব্যাপী আজও তা পালিত হয়।
সমগ্র বিশ্বে প্রায় ৮০টি দেশে ১লা মে জাতীয় ছুটির দিন। আরো অনেক দেশে এটি বেসরকারি ভাবে পালিত হয়।
তবে যুক্তরাষ্ট্র বা কানাডায় এইদিন পালিত হয় না। এ ছাড়া এইদিনে আরও কিছু ঘটনা রয়েছে যা আঞ্চলিক ভাবে হয়তো পালিত হয়।
আমেরিকা ও কানাডাতে অবশ্য সেপ্টেম্বর মাসে শ্রম দিবস পালিত হয়। সেখানকার কেন্দ্রীয় শ্রমিক ইউনিয়ন এই দিন পালনের উদ্যোগতা। হে মার্কেটের হত্যাকান্ডের পর আমেরিকার তৎকালিন প্রেসিডেন্ট গ্রোভার ক্লিভল্যান্ড যিনি আমারিকার ২২তম ও ২৪ তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি মনে করেছিলেন ১লা মে তারিখে যে কোন আয়োজন হানাহানিতে পর্যবসিত হতে পারে। সে জন্য ১৮৮৭ সালেই তিনি নাইটের সমর্থিত শ্রম দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেন এব্বং সেপ্টেম্বর মাসে শ্রম দিবস পালন করেন মে মাসে নয়।
বাংলাদেশেও পালিত হয় ‘মহান মে দিবস’। কিন্তু আমাদের দেশের দিনমজুর/ শ্রমিকগণ সঠিক মূল্য পায় না। যাদের মাথার ঘাম/রক্ত বেয়ে মাটিতে পরে তার পরও তাদের শ্রমের মূল্য হয় মূল্যহীন। সবাই শুধু ভাষণ-বক্তব্য দিয়ে মুখে ফেনা তুলে। কিন্তু শ্রমিকের ভাগ্য বদল হয় না। শোষণ চলে ঠিকই। আজ শ্রমিকরা তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। দেশের অর্থনীতির উন্নয়নের মূল ব্যাকবোন এসব শ্রমিক। প্রবাসে আমাদের প্রচুর সংখ্যক শ্রমিক ভাই-বোনরা বঞ্চনার শিকার হন। কিন্তু বাংলাদেশ এম্বাসী কতটুকু সেটার সমাধান দিতে পারে? কিছুই না। অথচ ইন্ডিয়া,পাকিস্তান,ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম সহ শত শত দেশের এম্বাসি কত শক্ত একশন নেয় তাদের জনগণের নানা সমস্যার জন্য। বাংলাদেশ সেখানে মিচি বিড়ালের মত গোজামিল দিয়ে বসে থাকে। আর শ্রমিকরা নিরবে চোখের পানি ফেলে জেলে যায় নয়তো দেশে ফেরত চলে যায়। সরকার কতটুকু তার সমাধান করে?????
প্রবাসী শ্রমিকরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।আমরা প্রবাসে কঠুর পরিশ্রম করে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা চাঙ্গা করছি। বাংলাদেশের সরকার আমাদের টাকায় চলে। আমাদের রোজগার করা টাকায় তাদের বেতন চলে, তাদের সংসার চলে,তাদের বড় বড় অট্টালিকা নির্মাণ হয় রাজধানী ঢাকায়, তারা বউ নিয়ে বিলাসবহুল রাজপ্রাসাদে আর শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গাড়ীতে ঘুরে, নৌবিহারে যায়, হানিমুনে যায়। কোথা হতে আসে এত টাকা???? এসব টাকা আসে দেশী-বিদেশী বাংলাদেশী শ্রমিকের রক্ত বিসর্জনের মাধ্যমে। কাজেই তাদের দিকে একবার সুদৃষ্টি দিন। এদের কথা আমাদের অবশ্যই ভাবতে হবে।
নচেৎ জাতি হিসেবে আমরা পিছনেই থেকে যাবো। সকল প্রবাসী ভাই সহ দেশবাসী সবাইকে ধন্যবাদ।

ফজলুর রহমান, সৌদি আরব।
Cell Phone:00966534580722
Email: frahmanapple@yahoo.com
E: rahmanmedical.hall89@yahoo.com
Twitter:@Frahmantwittman

No comments:

Post a Comment